আজ || রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫
শিরোনাম :
  গোপালপুরে এসএসসি পরীক্ষায় কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা       ধনবাড়ি মডেল প্রেসক্লাবে সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদ ও দোয়া       গোপালপুরে মরহুম আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট       টাঙ্গাইল-২ আসনে গণঅধিকার পরিষদের প্রার্থী শাকিল উজ্জামান       গোপালপুরে দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ       গোপালপুরে শিক্ষার্থীদের মাঝে গাছের চারা বিতরণ করেন সালাম পিন্টু       গোপালপুরে বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ছাত্রদলের বিক্ষোভ       গোপালপুরে যথাযোগ্য মর্যাদায় জুলাই শহীদ দিবস পালিত       গোপালপুরে বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল       গোপালপুরে প্রতিপক্ষের হামলায় ১২ মামলার আসামি চাকমা জাহাঙ্গীর নিহত    
 


গোপালপুরে দর্জি নিখিল হত্যার ঘটনায় ২ মামলা, সাংবাদিকসহ আটক ৪, আইন শৃঙ্খলা কমিটির মিটিং

“আদালত তোমাকে মুক্তি দিলেও আমরা তোমাকে মুক্তি দেবোনা”

Desktop1
নিজস্ব সংবাদদাতা :
টাঙ্গাইলের গোপালপুরে উগ্রপন্থিদের হাতে খুন হওয়া নিখিল জোয়ারদারের দোকানের শার্টারে ঘাতকরা রাতের আঁধারে নীল কালিতে লিখে রেখেছিল ‘আদালত তোমাকে জামিন দিলেও আমরা তোমাকে জামিন দেবোনা’। এই লেখাটি নিখিলকে ভয়তাড়িত করেছিল। পরবর্তীতে সে নিজের গতিবিধি সীমিত করে ফেলেন। দু’একজন পড়শিকে তিনি বিষয়টি অবহিতও করেছিলেন। কিন্তু ভয়ে থানা পুলিশের স্মরণাপন্ন হননি বলে জানান নিহত নিখিলের পরিবারের সদস্যরা।

নিখিল হত্যাকান্ডের পর বের হয়ে আসছে একের পর এক ঘটনা। প্রথমদিকে বিষয়টি নিয়ে কেউ মুখ না খুললেও এখন অনেকেই জানাচ্ছে নিখিল হত্যাকান্ডের পূর্বেই ঘাতকদের এই হুমকির তথ্য।

তবে এ ঘটনায় দানাবেধেছে নানা প্রশ্নের। কে বা কারা এবং কবে? এ ধরনের হুমকি বার্তা লিখেছিল। পরবর্তীতে কেনইবা পুলিশ প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর কাছে জানাননি বিষয়টি? এ রকম নানা প্রশ্ন এখন স্থানীয়দের। তবে এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজা হলেও ফিরে আসবে কি নিখিল-এমন প্রশ্ন পরিবারের সদস্যদের।

নিখিল জোয়ারদারের স্ত্রী আরতী রানী জোয়ারদার, দুই কন্যা টুলটুলি জোয়ারদার ও বন্যা জোয়ারদার গনমাধ্যমের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী কাছে ঘটনার রহস্য উদঘাটনসহ সুষ্ঠ বিচারের দাবী করেছে।

তবে থেমে নেই পুলিশ প্রশাসনেরও তৎপরতা। ঘটনা ঘটার কয়েকঘন্টার মধ্যেই জঙ্গিগোষ্ঠি ইসলামিক স্টেট (আইএস) এ হত্যার দায় স্বীকার করার পর থেকেই পাল্টে যায় এই মামলার তদন্তকাজ। প্রথম দিকে পারিবারিক ও জমিসংক্রান্ত বিষয়কে মাথায় রেখে তদন্ত কাজ শুরু হলেও পরবর্তীতে যোগ হয় জঙ্গীদের সম্পৃক্ততার বিষয়টি।

নিখিল হত্যাকান্ডের ঘটনায় ডিবি পুলিশ গত শনিবার গভীর রাতে এক সাংবাদিকসহ তিনজনকে আটক করেছে। এরা হলো দৈনিক ইনকিলাবের স্থানীয় সংবাদদাতা এবং আলমনগর মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম মারুফি, উপজেলা জামায়াতের সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বাদশা, বিএনপিকর্মী বীরনলহরা গ্রামের মৃত আব্দুর রশীদের পুত্র ঝন্টু মিয়া এবং ভূয়াপুর উপজেলার বীরহাটি গ্রামের আশিক।

আশিককে পুলিশের স্টিকারযুক্ত একটি নম্বরবিহীন মোটর সাইকেলসহ আটক করে।

হত্যাকান্ডের এ ঘটনা দুটি মামলা হয়েছে। একটির বাদি নিহত নিখিলের স্ত্রী আরতি জোয়ারদার। এ মামলায় অজ্ঞাত তিনজনকে আসামী করা হয়েছে। অপর মামলার বাদি হলেন গোপালপুর থানার এসআই মোকছেদুল আলম। এটি বিস্ফোরণদ্রব্য বহন ও প্রয়োগ সংক্রান্ত মামলা। উভয় মামলা ডিবি তদন্ত করছে বলে জানান গোপালপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল জলিল।

এদিকে ময়না তদন্ত শেষে আজ রোববার দুপুরে নিজ গ্রামের শ্মশানে দাহ করা হয়েছে নিখিলকে।

সকাল দশটায় নিহত নিখিলের বাড়িতে এসে শোকাগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের সাত্বনা দেন কৃষক শ্রমিক জনতালীগের প্রধান বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম।

তিনি এসময় মিডিয়া কর্মীদের বলেন, দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও অরাজকতার দরুন এ ধরনের খুনখারাপি হচ্ছে। তিনি সরকারের নিকট নিখিল হত্যাসহ উগ্রপন্থিদের হাতে সাম্প্রতিক ঘটনার সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানান।

গোপালপুর থানার ওসি আব্দুল জলিল জানান, তিনটি বিষয়কে মাথায় নিয়ে কাজ করছে পুলিশ। প্রথম উগ্রপন্থি, দ্বিতীয়ত পারিবারিক বিরোধ এবং তৃতীয়ত প্রভাবশালীদের দ্বারা জমিজেরাত দখল করার ষড়যন্ত্র।

এদিকে এ ঘটনার পরপরই উপজেলা পরিষদে আজ দুপুরে বিশেষ আইনশৃঙ্খলা কমিটির জরুরী সভা আহবান করা হয়।

এতে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসূমুর রহমান। বক্তব্য রাখেন উপজেলা চেয়ারম্যান ইউনুস ইসলাম তালুকদার, আওয়ামীলীগ সভাপতি হালিমজ্জামান তালুকদার, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান, পৌর মেয়র রকিবুল হক ছানা, উপজেলা পরিষদের ভাইসচেয়ারম্যান আব্দুল লতিফসহ স্থানীয় সূশিলসমাজের প্রতিনিধিরা।

মন্তব্য করুন -


Top
error: Content is protected !!